পাকিস্তানের কাছে হার বিরাট-বাহিনীর
ভারত: ১৫১-৭ (কোহলি ৫৭, পন্থ ৩৯)
পাকিস্তান: বিনা উইকেটে ১৫২ (রিজওয়ান অপরাজিত ৭৯, বাবর আজম অপরাজিত ৬৮)
পাকিস্তান ১০ উইকেটে জয়ী।
নিউজ ডেস্ক: বিশ্বকাপে ভারতকে প্রথমবার হারাল পাকিস্তান। বিশ্বকাপের মঞ্চে ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচ মানেই অবধারিত ভাবে ভারতের ক্যাম্পের দিকে। এই ছবিই এতদিন দেখে এসেছে ক্রিকেটবিশ্ব। ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার হরভজন সিং কটাক্ষ করে প্রাক্তন পাক পেসার শোয়েব আখতারকে বলেছিলেন, ক্রিকেট মাঠে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে ১০ উইকেটে হারিয়ে দিল। ভারতের সাত উইকেটে ১৫১ রানের জবাব দিতে নেমে ১৩ বল বাকি থাকতেই বিনা উইকেটে ১৫২ রান করে ম্যাচ জিতে নেয় পাকিস্তান। অধিনায়ক বাবর আজম ৬৮ ও রিজওয়ান ৭৯ রানে অপরাজিত থেকে যান।
৫০ ওভারের বিশ্বকাপে সাত বার দেখা হয়েছিল ভারত ও পাকিস্তানের। প্রতিবারই জিতেছিল ভারত। রবিবারের মহারণের আগে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাঁচ বার মুখোমুখি হয়েছিল দুই দেশ। ভারত ৫-০ জিতে এগিয়েছিল। অর্থাৎ ওয়ানডে ও টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিলিয়ে আগের ১২টি সাক্ষাতে ভারতই এগিয়েছিল ১২-০ ফলাফলে। কিন্তু বিশ্বকাপের ১৩ নম্বর সাক্ষাতে এসে বদলে গেল সব হিসেব।
রবিবার ভারত প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে করে সাত উইকেটে ১৫১ রান। জবাবে পাকিস্তান আধিপত্য রেখেই ম্যাচটা জিতে নিল। গোটা দিন কেমন যাবে তা শুরু দেখে বোঝা যায়। টস জিতে পাক অধিনায়ক বাবর আজম ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন ভারতকে। শুরুতেই বল হাতে আগুন জ্বালান শাহিন আফ্রিদি । ম্যাচের চতুর্থ বলেই রোহিত শর্মার গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন তিনি। ‘হিটম্যান’ তখনও খাতাই খোলেননি। ইনিংসের শুরুতে রোহিতের পা ঠিকঠাক চলে না। ঢিলেঢালা একটা ব্যাপার থাকে তাঁর খেলায়। কিন্তু সময় যত গড়াতে থাকে রোহিতের ব্যাট শাসন করতে শুরু করে বোলারদের। পাক ক্রিকেটাররা তা ভালই জানেন। বিশেষজ্ঞরাও আগেই জানিয়েছিলেন, শুরুতেই তুলে নিতে হবে রোহিতের মূল্যবান উইকেট। আফ্রিদি সেই কাজটাই করলেন। যে বলে মুম্বইকরকে ফেরালেন, তা এককথায় দুর্দান্ত। ডাগ আউটে রোহিত যখন ধীর পায়ে ফিরছেন, তাঁর শরীরী ভাষাই বলে দিচ্ছিল এই ডেলিভারি তিনিও হয়তো ইনিংসের শুরুতে আশা করেননি। শাহিন আফ্রিদির দুরন্ত গতির বলটা লোকেশ রাহুলের ডিফেন্স ভেঙে দিল। সেরা ফর্মের ওয়াসিম আক্রম, মহম্মদ আমিরকে তখন মনে করাচ্ছিলেন আফ্রিদি। ৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ভারত তখন রীতিমতো ধুঁকছে।
আফ্রিদিকে ছক্কা হাঁকিয়ে চাপ কমানোর চেষ্টা একটা করেছিলেন তিনি। ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলিরসঙ্গে পার্টনারশিপে ২৫ রান জোড়েন তিনি। কিন্তু বেশিদূর টেনে নিয়ে যেতে পারেননি। হাসান আলির বলে সূর্যকুমার ফিরলেন মাত্র ১১ রান করে। উইকেট কিপার মহম্মদ রিজওয়ান পাখির মতো শরীর ছুঁড়ে সূর্যর ক্যাচ ধরেন। ভারত তখনও বিপন্মুক্ত নয়।
আফ্রিদির জন্যই ভারতকে চাপে রাখতে পেরেছিল পাকিস্তান। কিন্তু ভারতের কোনও বোলার আফ্রিদি হয়ে উঠতে পারেননি। টি টোয়েন্টিতে ১৫১ রান খুব একটা বড় টার্গেট নয়। বিশেষ করে যে দলে রয়েছেন বাবর আজম, রিজওয়ানের মতো ব্যাট।তাদের থামিয়ে রাখতে গেলে শুরু থেকেই উইকেট তুলতে হত। কিন্তু ভুবনেশ্বর কুমার প্রথম ওভারে ১০ রান দিলেন। দ্বিতীয় ওভারে শামি দিলেন ৮ রান। ম্যাচ যত গড়াতে থাকল বাবর আজম ও রিজওয়ানের দাপট বাড়তেই লাগল। মহম্মদ শামি, বুমরা, ভুবির মতো বোলার থাকা সত্বেও একটা উইকেটও তুলতে পারল না ভারত। লজ্জার হার দিয়ে অভিযান শুরু করল ভারত।