লাইফস্টাইল

চিরকুমার হয়ে থাকতে চাওয়া মন্দ কি !

ইতিহাস ঘেঁটে যতদূর জানা যায়, সভ্যতায় বিয়ের উদ্ভব কৃষির সূচনা থেকে। মানুষ যখন কৃষি কাজ ও চাষাবাদ সম্পর্কে শিখতে শুরু করল, সেই সময় থেকেই বিয়ের উৎপত্তি। এর আগে দাম্পত্য বা যৌন জীবনের জন্য মানুষকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া লাগত না। জৈবিক এই চাহিদা পূরণের জন্য নারী/পুরুষ স্বাধীনভাবে জীবনসঙ্গী বেছে নিতে পারত। বিয়ে করা না করা নিয়ে সমাজে কোন আলোচনাই ছিল না। কিন্তু কালের বিবর্তনে আমরা এই রকম একটা সমাজে এসে দাঁড়িয়েছি, যেখানে বিয়ে করা নিয়ে যেমন জটিলতার শেষ নেই। তেমনি বিয়ে না করলেও সইতে হয় নানা গঞ্জনা। কিন্তু চিরকুমার হওয়া মন্দ কি- এটা নিয়ে এতো নেতিবাচক মনোভাবই কেন।

জীবনকে উপভোগ

মানুষের জীবন চক্র লক্ষ্য করলে দেখা যায়, ২৫ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত সে পড়াশোনা করে, নানা রকম দক্ষতা অর্জন করে। এরপর জীবিকা বা চাকরি-বাকরি, বিয়ে আর নানান রকম সামাজিকতার মধ্যে দিয়ে জীবন পার করে দেয়। দীর্ঘ এই জীবনে বেশির ভাগ মানুষই ভুলে যায় তার স্বপ্ন, তার কি ভালো লাগে বা কি মন্দ লাগে। জীবনের অর্থটা-ইবা কি, এটাও ভাবার সময় পায় না। এর মধ্যে কিছু মানুষ থাকতেই পারে, যারা জীবনকে উপভোগ করতে চায়। বিয়ে করে সাংসারিক জটিলতায় নিজেকে বন্দী করে চান না। এই ধরণের মানুষের সংখ্যাও খুব কম। কিন্তু চিরকুমার এই মানুষদের নিয়েও সমাজের যেন অভিযোগের শেষ নেই। অনেক সময় তাদের ব্যক্তি স্বাধীনতা ও জীবন উপভোগের ক্ষেত্রে সমাজ বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু তারপরেও জীবনকে উপভোগ করার ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকে চিরকুমাররা।

স্বপ্ন বাস্তবায়ন

শৈশবে প্রতিটা মানুষ নানা রকম স্বপ্ন দেখে। বড় হয়ে এটা হব, সেটা হব ইত্যাদি নিয়ে ভাবে। কিন্তু বড় হওয়ার সাথে সাথে এই স্বপ্নগুলো যেন অনেকটাই মিইয়ে যায়। নানান রকম বাস্তবতা আর সামাজিকতায় সব স্বপ্ন মরে যায়। কিন্তু চিরকুমার হলে নিজেকে সময় দেওয়া যায়। নিজের জন্য বেঁচে থাকা যায়। শৈশবের দেখা স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করা যায়। দীর্ঘ সময় নিয়ে নিজের লক্ষ্য ধরে এগিয়ে যাওয়া যায়।

জটিলতা নেই

চিরকুমার হওয়ার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, এই ধরণের মানুষের জীবনে জটিলতা নেই। সংসারী মানুষজন নানা রকম জটিলতায় থাকে। জীবন-জীবিকার জন্য আহ্নিক গতির চেয়েও বেশি গতিতে ছুটতে থাকে। সেইসাথে স্ত্রী, সন্তান-সন্ততি ও নানা রকম সামাজিকতার বিষয় তো রয়েছেই। কিন্তু চিরকুমারদের এই ধরণের কোন জটিলতা থাকে না। তারা যখন যা খুশি তা করতে পারে। সাংসারিক জটিলতা না থাকার কারণে কোন রকম পিছু টানও থাকে না। তাছাড়া, এসবের বাইরে গিয়েও চিরকুমারদের আরও বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। আর এতে করে খুব সহজেই তারা জীবনকে উপভোগ করতে পারে।